রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
পরীক্ষায় যাদের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে না; আপাতদৃষ্টিতে তাদেরকে নিরাপদ মনে হলেও ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় এই ধারণা উল্টে যেতে বসেছে। যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ; তারা সবাই কি নিরাপদ? পরিস্থিতি বলছে, ‘না’।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক বিশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও অনেকের শরীরে রয়েছে করোনাভাইরাস, অর্থাৎ তারা পজিটিভ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে সিটি স্ক্যান করাতে হবে।
র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট (আরএটি) অথবা আরটিপিসিআর টেস্ট; এতদিন এই দুটি পরীক্ষার মাধ্যমেই করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তবে ভাইরাসের নতুন ধরনের কারণে কেবল ওই দুই ধরনের পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে থাকা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে কিন্তু বাড়ি ফিরে ফের জ্বর এসেছে ওই রোগীর। ইতোমধ্যেই ভারতের গুজরাটে এমন অসংখ্য রোগীর খোঁজ পাওয়া গেছে। খোঁজ মিলেছে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাতেও।
ভারতের ন্যাশনাল অ্যালার্জি অ্যাজমা ব্রঙ্কাইটিস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অলোক গোপাল ঘোষাল। তিনি জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রেই এখন আরটিপিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সিটি স্ক্যানে তা শনাক্ত হচ্ছে। সিটি স্ক্যান অনেক সূক্ষ্ম বিচার করতে সক্ষম।
ডা. অলোক ভারতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে পিটিআইকে বলেন, করোনাভাইরাসের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে। সিটি স্ক্যানে যদি দেখা যায়- রোগীর বুকে ওই ধরনের বৈশিষ্ট বিদ্যমান, সঙ্গে সঙ্গে তাকে হোম আইসোলেশনে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া প্রাথমিক ভাবে মাল্টি-ভিটামিন, জিংক ট্যাবলেট খাওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, আরটিপিসিআর টেস্টে রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেও অনেকের কাশি কমছে না। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাদের সিটি স্ক্যান করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ফুসফুসে গভীর সংক্রমণ। সে কারণেই তারা অনেক সময় একইসঙ্গে আরটিপিসিআর আর সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. অলোক গোপাল ঘোষাল জানিয়েছেন, অনেকের সিটি স্ক্যান করার সামর্থ্য নেই। সেক্ষেত্রে দু’বার আরটিপিসিআর টেস্ট করতে হবে রোগীকে। রোগীর যদি জ্বর আসে, তাহলে জ্বর আসার দিন থেকে পাঁচদিন পর দ্বিতীয়বার আরটিপিসিআর টেস্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এতোদিন কেবল আরটিপিসিআরে কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া গেলে তারপরই এইচআরসিটি স্ক্যান করে দেখে নেওয়া হতো ফুসফুস ঠিক কতোটা আক্রান্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন এমনই যে আরটিপিসিআর টেস্টে কিছুই ধরা পড়ছে না। কেবল এইচআরসিটি বা হাই রেজ্যুলিউশন কম্পিউটেড টোমোগ্রাফিতেই ধরা পড়ছে ফুসফুসের প্রকৃত অবস্থা।
ভারতের আরেক সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হীতেন কেরালিয়া জানিয়েছেন, তাদের দেশে এখন তাই একইসঙ্গে দুটি টেস্ট করতে বলা হচ্ছে। আরটিপিসিআর এর সেন্সিটিভিটি ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে ফলস নেগেটিভ রিপোর্ট আসার।